(ভিডিও)জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে পুলিশ

SHARE

https://www.facebook.com/share/v/1Bq7bng5E4/

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ   প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার   ৩১ জুলাই ২০২৫ ||  শ্রাবণ ১৬ ১৪৩২ :

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশও নিজেদের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানে ইসিকে সহায়তা করতে পুলিশে শিগগিরই শুরু হবে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এ জন্য নতুন প্রশিক্ষণ কারিকুলাম ও ডকুমেন্টারি তৈরি করতে যাচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তর।

Advertisement

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাহারুল আলম গতকাল শুক্রবার আমাদের সময়কে বলেন, আমরা পুলিশকে নির্বাচন উপযোগী করে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা শুরু করেছি। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মাঠ পুলিশের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি সুন্দর ভোট অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে আমরা তৈরি হচ্ছি।

জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫ উদ্বোধনকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে মাঠপর্যায়ের পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ থাকার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন। পুলিশ সপ্তাহের তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে আলোচনায় আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের জন্য কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশকে কী ধরনের ভূমিকা নিতে হবে, এসব বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পুলিশকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আবু নাসের মোহাম্মদ খালেদের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নির্বাচন বিষয়ে পুলিশের অভিজ্ঞ কয়েকজন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিতর্কমুক্ত নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সহায়তা করতে দীর্ঘ আলোচনা করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেখানে ভোটার ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এ বিষয়ে মাঠ পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিয়ে

সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। এ ছাড়া অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে নানা কর্মসূচি গ্রহণের দিক নিয়েও আলোচনা হয়। সভায় ৪টি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া মাঠ পুলিশকে নির্বাচনী বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে একটি ডকুমেন্টারি ও নতুন প্রশিক্ষণ কারিকুলাম তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী বিষয়ে প্রথমে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসিদের প্রশিক্ষণ দেবে পুলিশ সদর দপ্তর। তারা আবার নিজ নিজ জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনবেন। এ ছাড়া বিতর্কমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে প্রশিক্ষণ পরিকল্পনায় মক টেস্টের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। এই মক টেস্টে ভোটকেন্দ্র, ভোটারদের নিরাপত্তা, ব্যালট বাক্স আনা নেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে ধাপে ধাপে পুলিশের কী ধরনের ভূমিকা নিতে হবে তার প্রশিক্ষণ দেবে পুলিশ সদর দপ্তর।

Advertisement

https://www.youtube.com/live/E9fMBkbJ3-M?si=k2Ro-HFkcInWkNQ

পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, বিগত ৩টি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করার ঘটনায় পুলিশকে সব সময় প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়। এমন প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কাজে পুলিশ যেন না জড়ায়, সে বিষয়ে আইজিপির কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। সামনে যে নির্বাচনই হোক, পুলিশ সেই নির্বাচনে বিতর্কিত কোনো ভূমিকায় জড়াবে না। প্রশিক্ষণে এ বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে স্মরণ করে দেওয়া হবে মাঠ পুলিশকে। এ ছাড়া বিগত ৩টি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ভোটারের খরা ছিল। অধিকাংশ ভোটার ভোট দিতে নিরুৎসাহিত ছিলেন। তারা ভোটকেন্দ্রে যাননি। যে কারণে কমিউনিটি পুলিশ দিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে তাদের সজাগ করার কর্মসূচি নেওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখছে পুলিশ সদর দপ্তর। এসব নানা বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সম্পৃক্ত করে কাজ করতে চায় পুলিশ।