মাইলস্টোন ট্রাজেডি: ছুটির ঘণ্টার আগেই অনন্ত ছুটিতে ছোট্ট প্রাণপাখিরা (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিনিধি,বুধবার   ২৩ জুলাই ২০২৫ ||  শ্রাবণ ৮ ১৪৩২ :

প্রাণের হিল্লোলে রোজ মুখরিত হতো যে সবুজ ক্যাম্পাস, আজ সেখানে জমেছে সহপাঠি হারানোর দীর্ঘশ্বাস। ফুলপাখির মতো ঝলমলে কচি প্রাণের অনুপস্থিতি বড্ড শূন্য করে গেছে এই প্রাঙ্গনকে। আর বন্ধুত্বে ভরা হৃদয়গুলো ভাসিয়ে গেছে ভীষণ কান্নায়। এ যেনো সীমাহীন শোকে মূর্ছা যাওয়া এক বিষাদের কাব্য।

Advertisement

স্কুল আঙ্গিনা থেকে উড়ে গেছে ছোট্ট প্রাণপাখিরা। ছুটির ঘণ্টার আগেই ওরা অনন্ত ছুটি নিয়েছে এই সবুজ প্রাঙ্গন থেকে। হঠাৎ ঝড়ে ঝরে গেছে যে ফুল-কলিরা, এ ফুলে মিটবে কী সে শুন্যতা!

মাইলস্টোন স্কুল ক্যাম্পাসজুড়ে বিষাদের ছবিগুলো যেনো নির্মাণ করেছে মন খারাপের যতো মাইলফলক। কত বছরের কতো চেনা মুখ হারালো কোন অদূরে! দেখা হবে না আর, বলা হবে না বন্ধু কেমন আছিস বল? এতটুকুন বয়সে এতো বড় বিয়োগের অংকটা বড্ড ভারি হয়ে গেলো ওদের কাছে।

মাইলস্টোনের একজন শিক্ষার্থী বলেন, একসময় আমাদের ভাইয়া ভাইয়া বলত, আমরা কথা বলতাম মজা করতাম। তারা যখন লাশে পরিণত হয়েছে সেটা দেখা মর্মান্তিক ও খুবই কষ্টকর। সে জায়গায় যদি আমরা থাকতাম কি হতো।

দেয়ালজুড়ে এমন মিশে থাকা হাসি আবার কবে ফিরবে স্কুল আঙ্গিনায়, কবে আবার শান্তির পায়রা হয়ে আসবে ছোট্ট সোনামনিরা জানা নেই কারো। কাগজের পাখ-পাখালিতে আবার কবে ফিরবে কচি প্রাণেরা, অপেক্ষার শুরু হলো সবে।

Advertisement

একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমার দুঃসম্পর্কের এক কাজিন মারা যায় আমার এলাকারই। আরও অনেকেই নাম না জানা বডি পাওয়া যাচ্ছে না মিসিং হচ্ছে, এই জন্য এখানে আসা।

ভস্মিভূতি ভবনের সামনে থেকে সরতে চাইছেন না রাবেয়া বেগম। কারণ তার তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া রাইসা মনি এখনো ফেরেনি ঘরে। স্কুল, হাসাপাতাল, নাকি মর্গ? কোথায় খুঁজে পাবে নারী ছেড়া ধন, সে বিলাপ যেনো থামাতে পারে না কেউ।

প্রভুর নামে শুরু হওয়া দিনটা ওরা হারিয়ে ফেলেছে দুপুর গড়ানোর আগেই। কঠোর পরিশ্রম আর প্রবল আত্মবিশ্বাস। এই ব্রত নিয়ে ক্লাসরুম থেকে যে সোনালি স্বপ্নেরা বড় হচ্ছিল, ক্লাসরুমের চৌকাঠ পেরুবার আগেই হয়ে গেল নিঃশ্বেষ।

নিচতলায় প্লেন আছড়ে পড়ার সময় দোতলায় ক্লাস করছিল অষ্টম শ্রেণীর কাওসার আহমেদ আলিফ। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বলছিল বেঁচে ফেরার গল্প।

আলিফ বলেন, প্লেনটা নিচে পড়ার সময় আমরা দোতলায় ক্লাসে ছিলাম। আগুনে পুড়ে সবাই দৌড়াচ্ছিল, কেউ চিৎকার করছিল। আমরা নিজেদের জামা খুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি। ওয়াশরুমের গ্রিল ভেঙে কোনোভাবে বেরিয়ে এসেছি।

প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান আছড়ে পড়েছিল যেখানে, সেই একই সরলরেখায় একটু পর-পর ছুটছে বিমান। প্রতিবার উহোজাহাজের শো-শো শব্দ উৎকণ্ঠ বাড়াচ্ছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।

Advertisement

https://www.youtube.com/live/E9fMBkbJ3-M?si=k2Ro-HFkcInWkNQ2

ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক হারানোর বেদনা কাটিয়ে হয়তো একদিন আবারো কর্মমূখর হবে, মাইলস্টোন ক্যাম্পাস। শুধু ফিরবে না ২১ জুলাই হারিয়ে যাওয়া ফুল-পাখিরা। যারা রেখে গেলো একটি বড় প্রশ্ন? আকাশযানের এই রুট বদলাবে নাকি ঠিকানা বদল হবে প্রিয় ক্যাম্পাসের।