হাইপারসনিক মিসাইল কিভাবে কাজ করে? ( ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক   প্রতিনিধি, সোমবার   ২৩ জুন ২০২৫ ||  আষাঢ়  ৯ ১৪৩২ :

গত মঙ্গলবার ইসরায়েলে স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে ইরান। প্রায় ২০০ হাইপারসনিক মিসাইল হামলা করেছে। ইসরায়েলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করে প্রায় বেশির ভাগ মিসাইল লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছে ইরান। প্রশ্ন হলো- কী এই হাইপারসনিক মিসাইল? কিভাবেই বা কাজ করে?

Advertisement

হাইপারসনিক মিসাইল এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যা শব্দের গতির কমপক্ষে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে ছুটে গিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানে।

শব্দের গতি হলো ঘণ্টায় প্রায় ১,২৩৫ কিলোমিটার। অন্যদিকে হাইপারসনিক মিসাইলের গতি ঘণ্টায় ৬,২০০ কিলোমিটারেও বেশি। প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর সাহায্যে অতি দ্রুতগতির এই মিসাইলগুলো শনাক্ত এবং ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন। 

কিভাবে কাজ করে এই মিসাইল?

মিসাইলটি প্রথমে রকেট বা বিমান থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।

এটি প্রথমে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে পৌঁছে, যেখানে বাতাসের ঘনত্ব অনেক কম। উচ্চতায় পৌঁছানোর পর মিসাইলটি গতি অর্জন করে এবং লক্ষ্যবস্তুর দিকে ধাবিত হয়। 

হাইপারসনিক মিসাইলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর অসাধারণ গতি। এটি শব্দের গতির পাঁচ থেকে দশ গুণ বেশি গতিতে চলে।

Advertisement

পাশাপাশি এটি তার গতিপথ পরিবর্তন করতে সক্ষম। প্রচলিত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর পক্ষে এই মিসাইল শনাক্ত করা এবং ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন। ফলে এটি হাইপারসনিক মিসাইল সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। 

সাধারণত এই মিসাইলের গতি এবং কার্যকারিতা এতটাই বেশি যে শত্রুর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়ে। এর আঘাত এত দ্রুত ঘটে যে প্রতিপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ থাকে না।

 

হাইপারসনিক মিসাইল প্রধানত দুই ধরনের হতে পারে। হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল (HGV) এবং হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল।

হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল (HGV) মিসাইল রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপিত হয় এবং বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে পৌঁছে গ্লাইড করে (ভাসতে ভাসতে) মাটির দিকে নেমে আসে। এটি লক্ষ্যে পৌঁছানোর সময় তার গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। ফলে শত্রুদের জন্য এটি শনাক্ত করা কঠিন করে তোলে।

হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল এই মিসাইলগুলো একটি স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন ব্যবহার করে। ফলে এই মিসাইলও উচ্চ গতিতে কাজ করে। এটি সাধারণত বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে চলে এবং নিজস্ব ইঞ্জিনের সাহায্যে লক্ষ্যে পৌঁছায়। ক্রুজ মিসাইলের গতিপথও পরিবর্তন করার ক্ষমতা রয়েছে।

প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর গতি এবং গতিপথ সাধারণত পূর্বানুমানযোগ্য হয়, ফলে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেগুলো শনাক্ত করে ধ্বংস করতে পারে। কিন্তু হাইপারসনিক মিসাইল অতিরিক্ত দ্রুত এবং তার গতিপথ বারবার পরিবর্তন করতে পারে, যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করে। ফলে মিসাইলটি শত্রুদের ওপর সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়।

Advertisement

https://www.facebook.com/share/p/1NT3RTcPAN/

বিশ্বের কিছু শক্তিশালী দেশ, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ইরান প্রভৃতি দেশগুলো হাইপারসনিক মিসাইল উন্নয়ন এবং পরীক্ষা করছে। যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুত, নির্ভুল এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার সক্ষমতা থাকায় এই মিসাইলগুলো আধুনিক সামরিক বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

সূত্র : হাউ ইট ওয়ার্কস

ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল ফাতাহ