১৬/০৮/২০১৬
অর্থবছরের হিসাবে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সরাসরি নিট বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়েছে।
বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ যে তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২০০ কোটি ১০ লাখ ডলারের নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে।
এই অংক আগের অর্থবছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি।
পদ্মা সেতুসহ সরকারের বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় দেশে বিনিয়োগের এক ধরনের ‘ইতিবাচক আবহ’ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত।
গুলশান, শোলাকিয়ার মত জঙ্গি হামলার ঘটনা আর না ঘটলে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকলে আগামী বছরগুলোতে এফডিআই বৃদ্ধির এই ধারাও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এই গবেষক।
ক্যালেন্ডার বছরের হিসাবে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ২০০ কোটি ডলারের ঘর অতিক্রম করে। সে বছর বাংলাদেশে ২২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের এফডিআই আসে, যা ছিল ২০১৪ সালের চেয়ে ৪৪ শতাংশ বেশি।
বেড়েছে নিট বিদেশি বিনিয়োগ
সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক
গতবছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালের এফডিআইয়ের যে হিসাব বিনিয়োগ বোর্ড প্রকাশ করেছে তা ছিল মোট এফডিআই। আর বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৫-১৬ অর্থবছরের যে তথ্য দিয়েছে, তা নিট এফডিআই।
বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসে তিন ভাগে। এগুলো হলো— ইকুইটি ক্যাপিটাল, রিইনভেস্টেড আর্নিং ও ইন্ট্রা-কোম্পানি লোন।
এ তিন ভাগে আসা মোট অর্থপ্রবাহকে গ্রস ফ্লো (মোট বিদেশি বিনিয়োগ-এফডিআই) বলা হয়।
বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যে অর্থ বাংলাদেশে নিয়ে আসে, তা থেকে খরচ উসুল (কস্ট রিকভারি) ও মুনাফা ভাগের (প্রফিট শেয়ার) অংশ তারা দেশের বাইরে নিয়ে যায়। একে বলা হয় ডিজইনভেস্টমেন্ট। গ্রস ফ্লো থেকে ডিজইনভেস্টমেন্টের অংক বাদ দিয়ে নিট বিনিয়োগ হিসাব করা হয়।
পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে
দেশে নিট বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ গত অর্থবছরে অনেকটা কমে গেছে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল। আর গত অর্থবছরে এসেছে ১২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ, পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৬৭ শতাংশের বেশি।
বিনিয়োগ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গতবছর সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
এর পরে রয়েছে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, জাপান ও ভারত।
সবচেয়ে বেশি এফডিআই পেয়েছে গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম, টেক্সটাইল অ্যান্ড ওয়্যারিং, ব্যাংকিং, টেলিকমিউনিকেশন, বিদ্যুৎ, খাদ্য, সিমেন্ট, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাত।