ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম(টিভি),স্বদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধির সৌজন্যে,বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫ || জ্যৈষ্ঠ ৮ ১৪৩২ :
কুমিল্লার মেঘনা থানায় এবার সরাসরি না গিয়েই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা যাবে। গত ১৫ মে থেকে এই অনলাইন জিডি সেবা চালু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল জলিল।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় মোবাইল ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাগজ হারিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ থানায় এসে জিডি করতে সংকোচ বোধ করেন বা সময়ের অভাবে পারেন না। আবার কখনো কেউ হুমকি পাচ্ছেন কিংবা কোনো সন্দেহজনক কিছু দেখেছেন, কিন্তু সরাসরি থানায় যেতে চান না। এই অনলাইন জিডি ব্যবস্থা চালু হওয়ায় এখন সেই সমস্যাগুলো দূর হবে। ঘরে বসেই জিডি করা যাবে।’
জিডি করার পুরো প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা দিয়ে ওসি বলেন-‘যদি আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তাহলে গুগল প্লে-স্টোরে গিয়ে ‘Online GD-Bangladesh Police’ নামে একটি অ্যাপ রয়েছে, সেটা ডাউনলোড করে নিতে হবে। অ্যাপটি ইনস্টল করার পর আপনার নাম, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং ঠিকানা দিয়ে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এরপর মোবাইলে একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) আসবে, সেটা দিয়ে অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করতে হবে। এরপর আপনি অ্যাপে ঢুকে ‘নতুন জিডি’ অপশন বেছে নিয়ে কী বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে চান-তা নির্বাচন করবেন। ধরুন আপনার মোবাইল ফোন হারিয়েছে, তাহলে ‘হারানো বস্তু’ অপশন বেছে নিয়ে, কোন জায়গায়, কখন ও কীভাবে হারিয়েছে এসব বিস্তারিত লিখবেন। চাইলে ছবি বা প্রমাণপত্রও সংযুক্ত করতে পারবেন। এরপর ‘জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করলেই আপনার জিডি থানায় চলে যাবে। আপনি সঙ্গে সঙ্গে একটি রেফারেন্স নম্বর পাবেন, যেটা দিয়ে আপনার জিডির বর্তমান অবস্থা বা আপডেট জানতে পারবেন। এছাড়াও কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করলে gd.police.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে একইভাবে অ্যাকাউন্ট খুলে জিডি করা যাবে’
ওসি জলিল আরও বলেন, ‘এটা পুরোপুরি ফ্রি সেবা। কেউ কারও কাছ থেকে টাকা চাইলে কিংবা সহায়তার নামে হয়রানি করলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাবেন। থানায় না এসে পুলিশের সহায়তা পাওয়ার এটা একটা আধুনিক ও নিরাপদ উপায়। আমরা চাই মেঘনা উপজেলার প্রতিটি মানুষ এই সেবা সম্পর্কে জানুক এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করুক।’
Advertisement
এদিকে সচেতন মহল বলছেন, অনেক সাধারণ মানুষ থানায় গিয়ে জিডি করতে ভয় পান বা সামাজিক কারণে চুপ থাকেন। অনলাইন সেবার মাধ্যমে তারা সহজে, নির্ভয়ে ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পুলিশের সহায়তা চাইতে পারেন। এতে একদিকে পুলিশের তথ্যভান্ডার সমৃদ্ধ হবে, অন্যদিকে অপরাধ প্রতিরোধে জনগণের অংশগ্রহণও বাড়বে। তাছাড়া প্রযুক্তির এই যুগে থানার দোরগোড়ায় না গিয়ে ঘরে বসেই পুলিশি সহায়তা পাওয়ার এই পদক্ষেপ শুধু সময়ের দাবি নয়, বরং এটি পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার এক বড় সুযোগ বলে মনে করেন তাঁরা।’