ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম(টিভি),বগুড়ার আদমদীঘি প্রতিনিধি,সোমবার ১৯ মে ২০২৫ || জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩২ :
চলন্ত ট্রেনের দরজার বাইরে ঝুলছেন এক ব্যক্তি। কিন্তু ট্রেনের ভেতর থেকে কেউ তার হাত ধরে রেখেছেন। প্রাণে বাঁচার জন্য বার বার আর্তনাদ করার একপর্যায়ে ভেতর থেকে হাত ছেড়ে দিলে রেললাইনে পরে যান তিনি। ঠিক এমনই ৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে গেল দুদিন ধরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৮ মে) বেলা একটার দিকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নসরতপুর রেলস্টেশন এলাকায়। ভুক্তভোগী ওই যুবকের নাম মতিউর রহমান। তিনি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পাড়ইল গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়ার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে মতিউর রহমান বিদেশে লোক পাঠাচ্ছেন। তার মাধ্যমে দুই বছর আগে সজীব নামের এক যুবক সৌদি আরবে যান। কিন্তু সৌদি আরবে যাওয়ার পর কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় ইকামা (কাজের সুপারিশ সনদ) না পাওয়ায় সজীবের পরিবারের সঙ্গে মতিউর রহমানের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জেরে সজীবের নির্দেশে কয়েকজন যুবক গতকাল মতিউর রহমানকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। সজীবের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার তালসন গ্রামে।
Advertisement
মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব বলেন, ‘বাবা গতকাল দুপুরে বগুড়া থেকে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনে সান্তাহারে আসছিলেন। আসার পথে নসরতপুর রেলস্টেশনে আসার আগে বাবার কামরায় থাকা ১০ থেকে ১২ যুবক বাবাকে মারধর করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে চলন্ত ট্রেনের দরজা দিয়ে তারা বাবাকে নিচে ফেলে দেন। ট্রেন থেকে রেললাইনে পড়ে গেলেও ভাগ্য বলে ট্রেনের চাকা তার শরীরের ওপর দিয়ে যায়নি। তবে আঘাত লেগে একটা পা ভেঙে গেছে।’
তিনি আরও জানান, তার বাবাকে উদ্ধার করে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর মতিউর রহমান এখন বগুড়ায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় কেউ মামলা নিচ্ছে না বলে দাবি করেন আহসান হাবিব।
Advertisement
অভিযোগের সূত্র ধরে সৌদি প্রবাসী সজিবের চাচা জাহাঙ্গীর আলমের কাছে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মতিউরের মাধ্যমে তার ভাতিজা সজিব সৌদিতে গেছে। কিন্তু মতিউর আমার ভাতিজার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সৌদিতে যে কোম্পানিতে কাজ করার জন্য পাঠাইছে তারা এখনো ইকামা দেয়নি। কিন্তু মতিউর আমার ভাতিজাকে ইকামা পাইয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখনো ইকামা দেয়ার কথা বলে নানা তালবাহানা করতেছে। এটা নিয়ে মতিউরের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলতেছে। তবে তাকে ট্রেনে মারধর ও ফেলে দেয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই।’
ছবি: সংগৃহীত