রাবিতে আপত্তিকর অবস্থায় ছাত্রী-শিক্ষক, যে সিদ্ধান্ত নিল বিভাগ (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম(টিভি),রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫ ||  জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩২ :

  আপত্তিকর অবস্থায় আটকের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রীকে বিভাগের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। অভিযোগটি অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে।

Advertisement

আজ শুক্রবার দুপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের একাডেমিক কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকরা। একাডেমিক কমিটির ‍দুজন সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শিক্ষকরা জানান, তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত অভিযুক্ত ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরের (এমবিএ) ওই ছাত্রী কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করেছে আজকের একাডেমিক কমিটি। একই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিভাগের একজন অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগামী রবিবার অফিস খুললে বিভাগের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। এখন থেকে তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত ওই ছাত্রী বিভাগের কোনো ধরনের ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। একই সঙ্গে ওই শিক্ষককেও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ফাইন্যান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. শিবলী সাদিকের মোবাইলে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে অবগত আছি। শিগগির আমরা এ নিয়ে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

এর আগে গত ১১ মে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষ থেকে ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহকে এক ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন শিক্ষার্থীরা। গত ১৪ মে বিষয়টি নিয়ে আমাদের সময় অনলাইনে ‘রাবি শিক্ষকের কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় ছাত্রী, হাতেনাতে ধরা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষক ও ছাত্রীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

Advertisement

কী ঘটেছিল সেদিন

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিন বিকেল ৫টার দিকে ওই ছাত্রীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। কক্ষে প্রবেশের পর বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই কক্ষের দরজায় কড়া নাড়েন। বেশ কিছুক্ষণ পর শিক্ষক দরজা খুলে দেন। শিক্ষার্থীরা কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন, ছাত্রীর ওড়না-হিজাব শরীরে নেই। ছাত্রীর ব্যাগ, সেফটিপিনসহ অনেক কিছু শিক্ষকের টেবিলে ছিল। পাশেই রাখা ছিল বালিশ।

Advertisement

ছাত্ররা ভিডিও করার সময় ওই ছাত্রীর মাথায় একটি রুমাল পরিয়ে মাথা ঢেকে দেন মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তখন জানতে চান, ছাত্রীর মাথায় কেন রুমাল পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? জবাবে শিক্ষক বলেন, ‘সে মেয়ে মানুষ, তাই।’ এ সময় ওই শিক্ষক ও ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় কক্ষে প্রবেশ করা শিক্ষার্থীদের। পরে বিষয়টি তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর কক্ষে ছাত্রী। ছবি: ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম(টিভি)