ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),সাভার প্রতিনিধি,বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ :সাভারের সাবেক এমপি শামসুদ্দোহা খানের স্ত্রী সেলিমা খান মজলিশ আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছিলো। আর রহস্যময় এ হত্যাকাণ্ডে নিজের মেয়ে এবং সাভার অফিসেরই একজন জড়িত ছিলেন বলে বেরিয়ে এসেছে।
Advertisement

১৩ বছর আগের ওই ঘটনার তদন্ত শেষে এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অবশ্য এর আগে চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার তদন্ত করে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট বা সিআইডি বলেছিলো, সেলিমা খান আত্মহত্যা করেছিলেন।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, সেলিনা খান হত্যার সাথে জড়িত ছিলো সাভার থানা অফিসের একজন ইলেকট্রেশিয়ান, যাকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০১১ সালে সাভার দক্ষিণ পাড়া এলাকার একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলার রুমেই নির্মমভাবে খুন হন সাবেক এমপি শামসুদ্দোহার স্ত্রী মজলিস। ওই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর মাত্র ৯ দিন তদন্ত করে থানা পুলিশ।
পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। প্রায় সাড়ে চার বছর তদন্ত করে তারা সেলিনা খান মজলিশের হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
Advertisement

ঘটনার প্রায় ১৩ বছর পর ২০২৪ সালে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। গত ৩০ মে সাভারে গ্রেপ্তার হন, হত্যায় অভিযুক্ত সুবল কুমার রায়। তার দেয়া তথ্যে গ্রেপ্তার হয় আরও দুজন। তাদের মধ্যে একজন ভিকটিমের মেয়ে শামীমা খান মজলিস, যিনি নিজেই মাকে হত্যার সাথে জড়িত।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার বলেন, সিআইডির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা মামলাটির তদন্ত করেন এবং ১৪ মাস পর একটি ফাইনাল রিপোর্ট দেন। ফাইনাল রিপোর্টে ধারণা দেয়া হয়, সেলিমা খান আত্মহত্যা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মূলত সুবলের সঙ্গে মেয়ে শামীমার প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেয়ার কারণেই খুন হন সেলিনা খান।
পিবিআই প্রধান আরও বলনে, শামীমা খান মজলিস তার মাকে জাপটে ধরেন। সুবলের ভাষ্যমতে, তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, তখন পাশে ছিলো একটি ফল কাটা ছুরি। সেই ছুরি দিয়ে মায়ের একপাশে দুই পোচ দেন এবং আরেক পাশে আরেকটি পোচ দেন। পোচ দেয়ার পর তখন দেখেন উনি মরেন নাই বা উনি তখনও চিৎকার করছেন, তখন তার মাথায় এলো, সে (সুবল) ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তখন সে ইলেকট্রিক বোর্ডটা ভাঙে। ভেঙে সে তার টেনে বের করে ইলেকট্রিক শক দেন।
পিবিআই জানায়, মা-মেয়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়েও ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো তাদের। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
যে কারণে হত্যাকাণ্ড
ভুক্তভোগী সেলিমা খান মজলিসের বড় মেয়ে পপি তার স্বামীকে নিয়ে ঐ বাড়ির নিচতলায় বসবাস করতেন। সেখানে ইলেকট্রিশিয়ান সুবল কুমার রায় নিয়মিত যাতায়াতের একপর্যায়ে তিনি শামীমা খান মজলিসের স্বামীর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে ২০০১ সালে আসামি সুবল কুমার রায় ও শামীমা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানাজানি হলে ২০০৫ সালে সুবলকে মারধর করা হলে তিনি সেখান থেকে চলে যান।
Advertisement

২০০৮ সালে সুবল বিয়ে করেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি আবার সেই বাসায় যাতায়াত শুরু করেন। তাকে যাতায়াত করতে দেখে ফেলেন সেলিমা খান মজলিস। এ কারণেই সুবলকে নিয়ে মা সেলিমা খান মজলিসকে হত্যা করেন শামীমা।







