ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),আখাউড়া প্রতিনিধি ,সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১ : আদালতের নিষেধাজ্ঞার আগেই ছাগলকাণ্ডে আলোচিত এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন চলছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রোববারই দেশত্যাগ করেছেন মতিউর। নিজের পরিচয় আড়াল করে মাথা ন্যাড়া করে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন তিনি।
Advertisement

১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনা নিয়ে হঠাৎ আলোচনায় আসার পর মতিউর রহমানের ভূরি ভূরি সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে।
তিনি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট। রোববার সেখান থেকে তাকে সরিয়ে সংযুক্ত করা হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে।
এনবিআরে থাকার সময় সরকারি চাকরির প্রভাব খাটিয়ে মতিউর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ।
চাকরির আড়ালে একাধিক বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, বিঘার পর বিঘা জমি, রিসোর্ট, কোম্পানির মালিকানাসহ অজস্র সম্পদ গড়ে তোলেন এই সরকারি চাকুরে।
মতিউরের নেতৃত্বে একটি চক্র দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে বলেও গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। প্লেসমেন্ট বাণিজ্য ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে বিনিয়োগের শত শত কোটি টাকা মতিউর চক্র হাতিয়ে নিয়েছে বলেও খবর বেরোচ্ছে।
সম্পদের পাশাপাশি জনসম্মুখে আসছে মতিউরের পারিবারিক কেচ্ছাও। তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান। এর আগে ছিলেন শিক্ষক।
ওই শিক্ষকের তার নির্বাচনী হলফনামায় পাহাড়সম সম্পদের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা দেখে চোখ ছানাবড়া হওয়ার দশা। এই কানিজও শেয়ারবাজারের বিশাল সুবিধাভোগী।
Advertisement

এতোদিন দোর্দণ্ড প্রতাপে মতিউরের ভয়ে কেঁপেছেন অনেকেই। এনবিআরের চেয়ারম্যান পর্যন্ত তাকে সমঝে চলতেন। দাপুটে এই লোক যোগাযোগ রাখতেন প্রভাবশালীদের সঙ্গে। গড়ে তুলেছিলেন নিজস্ব প্রভাব বলয়। সেই বলয়ের সদস্যদের নামও এখন আকার ইঙ্গিতে বেরিয়ে আসছে।
কিন্তু সপ্তাহ খানেক আগের সেই প্রতাপশালী মতিউর এখন কোথায়? ঢাকার একাধিক বাড়ির কোথাও মিলছে না তার দেখা। ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর থেকে কোনো হদিস মিলছে না মতিউরের। সর্বশেষ গত ১৮ জুন একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেন। এরপর থেকেই লাপাত্তা।
বসুন্ধরা, ধানমণ্ডিসহ মতিউরের বিভিন্ন বাসভবনে খোঁজ নিয়েও সন্ধান মিলছে না। ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও তিনি সেখানে যাননি।
রোববার মতিউরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। সেই কমিটি কাজ শুরু করেছে দিয়েছে।
সোমবার মতিউর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্নবেরও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, মতিউর কি আদৌ দেশে আছেন? এ প্রশ্নে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের খবর প্রকাশিত হচ্ছে।
একটি টেলিভিশনের সংবাদ প্রকাশ করেছে, ‘প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রোববার বিকেলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ছেড়েছেন মতিউর রহমান। তার ঘনিষ্ঠ একাধিক কাস্টমস কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।’
Advertisement

আরেকটি অনলাইন পত্রিকা লিখেছে, ‘মাথা ন্যাড়া’ করে দেশ থেকে পালিয়েছেন মতিউর! কোরবানির ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও তিনি আর অফিসে আসেননি। এ সময়ে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি দেশ ছাড়ার সব প্রস্তুতি সেরেছেন।

মাথা ন্যাড়া করে পালিয়েছেন মতিউর, এমন গুঞ্জনের পর প্রযুক্তির সাহায্যে মতিউরের সম্পাদিত ছবি।






