উপজেলা নির্বাচন, এক জায়গায় বউ আরেক জায়গায় ছেলেকে দেয়া ঠিক না: প্রধানমন্ত্রী

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার,  ০২ মে ২০২৪১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে এক জায়গায় বউ আরেক জায়গায় ছেলেকে দেয়া ঠিক না। উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত করতেই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যাতে পরিবারের কেউ না দাঁড়ায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (০২ মে) থাইল্যান্ড সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

 

শেখ হাসিনা বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজন ও এক জায়গায় তাদের বউ আরেক জায়গায় ছেলেকে প্রার্থী দেয়া ঠিক না। সবকিছু নিজেরাই নেবেন, কর্মীরা কিছু পাবে না৷ তা তো হয় না৷ সেজন্যই এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো৷ 
নির্বাচনে অন্য দলগুলো অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, 
 

Advertisement

তারা আসে না, তাদের জন সমর্থন ও সক্ষমতা নেই বলে৷  অন্য অনেক দেশে নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠাবে বাংলাদেশ৷ দেখবো সেখানে কেমন ভোট হয়৷ নির্বাচনী ব্যবস্থাটাকে আমরা আরও গণমুখী করতে চাই৷ প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করার জন্যই উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা যেন না দাঁড়ান,  সেই জন্য এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দলে৷ মানুষ যাকে চাইবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন৷

 

এ সময় অবৈধ মজুতদারদের বিষয়টা নিয়ে  তিনি বলেন, 
  

পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়টি সরকারের নজরে আছে৷ কিছু আছে চক্রান্ত, কিছু আছে অধিক মুনাফার লোভ৷ নির্দিষ্ট বেতনে চলা মানুষ কষ্টে আছে এটা ঠিক৷ তবে পণ্যের দাম একটু বাড়লেই, অনেক বড় করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়, এটা ঠিক না৷ কেননা, কমবেশি বিশ্বের সব দেশেই এখন মুদ্রাস্ফীতি চলছে৷

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। বৈশাখ মাসে দেশে গরম পড়া নতুন কিছু নয়৷ তবে সবাইকে সাবধান হতে অনুরোধ করছি৷ কেননা, হিটস্ট্রোক বাড়ছে৷ প্রকৃতির সঙ্গে তো কিছু বলার নেই৷ দেশে বন্যা হতে পারে৷ সেসব মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে৷

 
 
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 

Advertisement

 

১৫ বছর আগে দেশের অবস্থাটা কী ছিলো, এখন কী কোনো পরিবর্তনই হয়নি? দেশবিরোধী অনেকেই অপবাদ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে৷ তারা মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ বাম দলগুলো এখন নব্বই ডিগ্রি ঘুরে গেছে৷ তারা তো গণমুখী দল৷ তারা আওয়ামী লীগকে উৎখাৎ করলে, কারা আসবে ক্ষমতায়? সেটা কী ভেবেছে, সেটা তো বলে না৷ তাই জনগণের সমর্থনও তারা পায় না৷

 

তিনি বলেন, নতুন করে সরকার গঠনের পর থাইল্যান্ডেই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর ছিল এটি৷ সফরটি বহুবিধ কারণেই সফল হয়েছে; কী পেলাম আর কী পেলাম না৷ সেটি বিষয় নয়৷ তবে সহযোগিতার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হলো থাইল্যান্ডের সঙ্গে; এটা বলতে পারি৷ দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেকখাতে সম্ভাবনার দিক চিহ্নিত করা হয়েছে৷ আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সফরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷
 
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গেই থাকবে এমন আশ্বাস দিয়েছেন৷
 
শেখ হাসিনা আবারও বলেন, 
  

দেশে অতিবাম এবং অতিডান মিলে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করলেও দেশের জনগণের সাড়া পাচ্ছেন তারা। নির্বাচন নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে, যাতে নির্বাচনটা না হয়। আমার শক্তি দেশের জনগণ। জনগণ যতক্ষণ চাইবে, ততক্ষণই ক্ষমতায় থাকবে আওয়ামী লীগ৷ মানুষের কল্যাণে কাজ করি আমরা, এটা প্রমাণিত সত্য। যতো বাধাই আসুক, তা অতিক্রম করা সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র জনগণের আস্থা-সমর্থনের কারণে৷ আওয়ামী লীগ কোনো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। যাদের নির্বাচন করার সক্ষমতা নেই, তারা ভোট বর্জন করে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেই ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ।

 

ফিলিস্তিনের পক্ষে আছে বাংলাদেশ এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকার পুলিশ যেভাবে নির্যাতন করছে দেশটির শিক্ষার্থীদের ওপর৷ সেই আমেরিকার স্টাইলে আন্দোলন-বিক্ষোভ দমন করতে বলবো নাকি পুলিশকে৷ কেননা, পুলিশ তো সবসময় ধৈর্যের পরিচয় দেয়৷  নিজের ঘর আগে সামলাক যুক্তরাষ্ট্র৷ সেখানে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷
 
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিশ্ব পরিস্থিতি দেখে নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে৷ শিগগিরই ১৪ দলের বৈঠক করা হবে৷ ১৪ দল না থাকার, প্রশ্নই আসে না৷ জোট শেষ হয়ে গেছে, এটাও ঠিক না বলেন তিনি৷
  

দেশে অতিবাম এবং অতিডান মিলে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করলেও দেশের জনগণের সাড়া পাচ্ছেন তারা।  বললেন শেখ হাসিনা

এ সময় বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, মডার্ন বাস কিনলে, বিএনপি আন্দোলনের নামে সেগুলো পুড়িয়ে দেয়৷

 
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দ্বিপাক্ষিক সফরে এবং ইউএন-এসক্যাপের ৮০তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য গত ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল থাইল্যান্ডে এ সফর। এতে কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন। ২৪ এপ্রিল ব্যাংককে পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা, গার্ড অব অনার ও গানস্যালুটের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর বিভিন্ন বৈঠকে মিলিত হন।

Advertisement

 
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে।  ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে দলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বজনদের অংশ না নেয়ার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে যারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন তাদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশও দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে সাংগঠনিক ব্যবস্থারও কথা বলা হয়েছে।