জমির দাম কমে যাবে, তাই কবর দেয়ায় ভাই-বোনের বাধা (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বরিশাল প্রতিনিধি,সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪  : শহরের দামি জমি। এই জমিতে কবর হলে বিক্রির মূল্য কমে যাবে। তাই রাস্তার পাশে কফিনবন্দি হয়ে পড়ে থাকে মাহবুবুর রহমানের মরদেহ। বার্ধক্য জনিত কারণে স্বাভাবিক মৃত্যুর পর তাকে মাটি দেয়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয় পরিবারের মাঝে। মাহবুবের সন্তান ও স্ত্রীর আকুতিতেও মন গলেনি তার আপন ভাই ও বোনদের।

Advertisement

শহরের দামি জমি। এই জমিতে কবর হলে বিক্রির মূল্য কমে যাবে। তাই রাস্তার পাশে কফিনবন্দি হয়ে পড়ে থাকে মাহবুবুর রহমানের মরদেহ। বার্ধক্য জনিত কারণে স্বাভাবিক মৃত্যুর পর তাকে মাটি দেয়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয় পরিবারের মাঝে। মাহবুবের সন্তান ও স্ত্রীর আকুতিতেও মন গলেনি তার আপন ভাই ও বোনদের।

দাফনে বাধা দেয়ায় রাতভর মাহবুবুর রহমানের মরদেহ রাখা হয় বাড়ির বারান্দায়। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান সগিরের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিকদের দেখেই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। পরে তিনি জানান, কোন ধরনের কবর দেয়া যাবে না নগরীর দামি জায়গায়। আর বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন মাহবুবের মেঝো ভাই সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মঞ্জুর রহমান।

তাদের এই আচরণে এলাকায় সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সমাধানে, স্থানীয় মুসুল্লিরা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হলে তিনিও সিদ্ধান্ত দেন নগরীর রূপাতলী এলাকায় মরদেহ দাফনের জন্য। কিন্তু নগরীর দামি জায়গায় দাফন করতে দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মোস্তাফিজুর ও মঞ্জুর। এনিয়ে ক্ষোভ দেখা দেয় এলাকাবাসীর মাঝে।

Advertisement


নজরুল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, এসব কিসের আলামত আমার জানা নেই। ভাইয়ের কবর ভাইয়েরা দিতে দিচ্ছে না, এটা এবার জীবনে প্রথম দেখলাম। আল্লাহ এদের বিচার করবে। মানুষ কিভাবে এতটা নিচু মন মানসিকতার হয় আমার জানা নেই।

রফিক নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বেঁচে থাকতে ভাই বোনের সবার মধ্যে খুব মিল ছিল। আজ সামান্য জায়গার জন্য ভাইয়ের মরদেহ দাফন করতে দিল না তারা। এরাও তো একদিন মরবে। তাদের সন্তানরা কি শিখল। আল্লাহ এসবের বিচার করবে।
রোকন নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু নিহতের ভাই বোনরা কোন কিছুতেই মানে নি। হায়রে দুনিয়া নিজের কাছেই এসব ঘটনা দেখে কষ্ট লাগছে। আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুক।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ জানান, বিষয়টা মীমাংসার আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু নিহতের পরিবারের কথা নিহতের ভাই-বোনরা রাখছে না। এটা দুঃখজনক। আমার এলাকায় এর আগে কোনদিন এমন ঘটনা ঘটেনি। জায়গা জমি দিয়ে কি হবে। কেউ কি এসব কবরে নিয়ে যেতে পারবে। ভাইয়ের সঙ্গে ভাইবোনেরা এ কেমন আচরণ করল আমার মাথায় আসে না।

Advertisement


শেষমেশ বাধ্য হয়ে মাহবুবের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার তিমির কাঠি গ্রামে। পরিবারের সিদ্ধান্তে সেখানেই হয় দাফন।
শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী বরিশাল নগরীর রুপাতলী এলাকার ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমিতে দাফন করা যায়নি মাহবুবুর রহমানকে। ছবি: সংগৃহীত