জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ নিয়ে দেয়া বক্তব্যের বিষয়ে এবার মুখ খুললেন মমতাজ (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩ : সারাদেশে চলমান লোডশেডিংয়ে জনসাধারণের কষ্টের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবে মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার করে গুজব ছড়ানো নিয়ে এবার মুখ খুললেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।

Advertisement

মঙ্গলবার (৬ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে ফেসবুক লাইভে আসেন মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর-হরিরামপুর ও সদর) আসনের এ সংসদ সদস্য।

সকলের প্রতি সালাম শ্রদ্ধা জানিয়ে লাইভের শুরুতেই নিজের নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন তুলে ধরেন মমতাজ। এরপর সম্প্রতি দেশজুড়ে অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের পর জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিদ্যুৎখাতে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে যে বক্তব্য তিনি দিয়েছিলেন, তা নিয়ে ‘ট্রল’ না করে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আজকে যে কথাটা বলার জন্য লাইভে এসেছি। সাময়িক একটা কষ্টের মধ্যে সারাদেশের মানুষ পড়েছি, সেটা হলো- বিদ্যুৎ। এ বিদ্যুৎ নিয়ে যেমন কষ্ট আছে, তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবে নানা ধরনের কথা, আলোচনা-সমালোচনা ও প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। যেহেতু আমি এমপি, কাজ করতে হলে.. আমার এলাকায় কী কী কাজ করেছি, কী কাজ করা বাকি আছে, সেগুলো বলার একটি জায়গা হলো সংসদ। সংসদে আমি অনেক বক্তব্য দেই। তার দু-একটি কথা ধরে অনেকেই এটার সমালোচনার ঝড় তুলেছেন এ কষ্টের মধ্যে। কারণ বিদ্যুৎ থাকছে না, বিদ্যুতের কষ্টটা সবাই পাচ্ছি। সেটা কম-বেশি। সবার ঘরেই কিন্তু আজকে এ সমস্যাটা আছে।’

Advertisement

মমতাজ বলেন, ‘এটা সাময়িক সমস্যা। আপনারা জানেন যে, বিশ্বের কী অবস্থা। কিছুদিন আগে করোনা মহামারি গেলো। তারপরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের অনেক ক্ষতির মধ্যে ফেলেছে। বড় বড় দেশও হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশ তো ছোট্ট একটা দেশ। সেখানে সরকার চেষ্টা করছে, আমরাও চেষ্টা করছি। তারপরও আমাদের এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমি বলবো- সেটা যেন আমরা ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি। আমাদের সৃষ্টিকর্তা আছেন, আল্লাহর কাছে একটু পানাহ চাইতে পারি।’

আওয়ামী লীগের এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘সরকার কিন্তু চেষ্টা করছে। আপনারা জানেন, গতকালও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এসব নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীও কথা বলেছেন। সংসদে আলোচনা হচ্ছে। যে সমস্যাটা এ মুহূর্তে আছে, এটা সাময়িক। সরকার চেষ্টা করছে সাময়িক এ সমস্যা কাটিয়ে আমরা যেন আগামীতে বিদ্যুতের একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারি। হ্যাঁ, আমি কেন বলেছিলাম সংসদে, আপনারা জানেন, এটা তো মিথ্যা কথা নয় যে, বিদ্যুৎ যে হারে সরকার উৎপাদন করেছে, ঘরে ঘরে লাইন দিয়েছে। সত্যিকার অর্থে সরকার প্রশংসা কুড়িয়েছে। সেই প্রশংসা আমিও করেছি।

তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় আগে ৩০ শতাংশ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল। আমি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালনকালে শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। একসময় এলাকায় গেলে গ্রামের মা-বোনেরা এসে বলতেন- আপা, কিছু চাই না। আমাদের বিদ্যুতের লাইন দেন, মিটার দেন। মিটারের অভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। এই যে একটা সংকট ছিল তখন, সেটা কিন্তু আমরা সমাধান করেছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। মানুষ তখন খুশি হয়েছিল। সেজন্য সংসদে বলেছিলাম, মানুষ বিদ্যুৎ চাইতো। একসময় এ চাওয়ার ব্যাপারটা আর থাকবে না। সরকার যেভাবে বিদ্যুতের লাইন দিচ্ছে, উৎপাদন করছে, ঘরে ঘরে মিটার পৌঁছে দিচ্ছে।’

মমতাজ বলেন, ‘এখন কিন্তু সত্যিকার অর্থে গ্রামে গেলে কেউ বলেন না আপা, দুইটা মিটার দেন, পাঁচটা মিটার দেন। মিটার দেওয়ার জায়গা আসলেও খুঁজে পাওয়া যায় না। এটাই কিন্তু বাস্তব। আর সেই কথাটাই সংসদে আমি বলেছিলাম। সেটার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে, ভুলভাবে উপস্থাপন করে অনেকেই.. অসাধু কিছু লোকজন খামোখায় দুইটা বাজে কথা ফেসবুক-ইউটিউবে বলার চেষ্টা করছেন। আমি তাদের বিনীতভাবে বলবো- আপনারা জ্ঞানী মানুষ হয়েও ভুল ব্যাখ্যা দেন, বাজেভাবে উত্থাপন করেন। তাদের বিনীতভাবে বলবো- দেখেন আমার কথা… আমার কথার সত্যতা আছে। আমি সঠিক সময়ে সঠিক কথাই বলেছিলাম। সাময়িক এ সমস্যা হবে এটা আপনি-আমি কেউ জানতাম না।’

Advertisement

শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মমতাজ বলেন, ‘আমরা কী জানতাম পাকিস্তানের এ অবস্থা হবে? শতভাগ শিক্ষিতের দেশ শ্রীলঙ্কা, সেই দেশের মানুষের এমন করুণ পরিস্থিতি হবে। আমরা কিন্তু জানতাম না। আমরা অনেক কিছুই জানি না। কখন যে কী হয়, সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ জানেন না। যখন আমি সংসদে কথাগুলো বলেছিলাম, সত্যিই আমাদের বিদ্যুতের অবস্থা এত সুন্দর ও ভালো ছিল। সেসময় শতভাগ বিদ্যুতায়ন আমার আসনে করেছি, মানুষকে বিদ্যুতের লাইন দিতে পেরেছি।’