ঋণের টাকা না পেয়ে মিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা!

SHARE

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন মধ্য কুনিপাড়ায় একটি সমিতির ঋণের টাকা দিতে না পারায় মো. কামরুল ইসলাম নামে (৪০) এক রাজ মিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার থানায় মামলা করতে চাইলেও তা নেয়নি পুলিশ।

গত শুক্রবার রাতে কামরাঙ্গীর চর থেকে মাইক্রোযোগে কামরুলকে ধরে নিয়ে এসে পিটিয়ে আহত করা হয়। অসুস্থ অবস্থায় জোর করে তাকে বিষ খাওয়ানো হয়। পরে গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠিয়ে ঘটনাটিকে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে চালিয়ে দেয়া হয়।

নিহতের ভাগ্না রানা বলেন, মামা (কামরুল ইসলাম) তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন মধ্য কুনিপাড়াস্থ কাজী ভবন এলাকার ২৩/১ সি বাসায় থাকতেন। পেশায় তিনি রাজ মিস্ত্রী ছিলেন। পাশাপাশি তার উত্তরায় তার একটি মুদি দোকানও ছিল।

নিজের প্রয়োজনে তিনি মধ্য কুনিপাড়ার ‘বন্ধুজন ইলেক্ট্রনিক্স সমিতি’ থেকে এক লাখ টাকা লোন নেন। সে টাকা পরিশোধের পর তিনি আবারো ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লোন নেন। কিন্তু গত মাস দুয়েক হলো টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাকে সমিতির লোকজন অপমান করে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।

ওই ঘটনার পর তিনি রাজধানীর কামরাঙ্গীচর এলাকায় চলে যান। সেখানে ২ সপ্তাহ থাকার পর গত পরশু (শুক্রবার) রাতে সমিতির দফতর সম্পাদক এনায়েত, কালাম, সেলিম, শাহ আলমসহ ৫ জন মাইক্রোযোগে মামাকে (কামরুল) ধরে নিয়ে যায়। আসার পথে মাইক্রোতে তাকে বেধড়ক পেটায় তারা।

সমিতির কার্যালয়ে আনার পর আরও কয়েক দফায় মারধর করা হয় কামরুলকে। এমনকি তিনি বাথরুমে যেতে চাইলে সেখানেও যেতে দেয়া হয়নি তাকে। রাতে মামার অবস্থা খারাপ হলে তারা মামাকে বিষ খাইয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।  সেখানে তিনি মারা যান।

নিহতের ভাগ্নের অভিযোগ তিনি বিষ খেয়ে মারা যাননি, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করতে চাইলেও গতকাল রাত পর্যন্ত মামলা নেয় নি পুলিশ।

একই ঘটনায় কামরাঙ্গীচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। রানা বলেন, “ঘটনার পর পুলিশ অভিযুক্তদের না পেয়ে দুই নারীকে ধরে নিয়ে আসলেও তাদের দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে।

নিহতের স্ত্রী হাজেরার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বাদি হয়ে মামলা করতে চাইলে মামলা নেয়নি পুলিশ। ময়না তদন্ত শেষে রোববার (১৭ জানুয়ারি) সকালে ঢামেক হাসপাতাল থেকে কামরুলের মরদেহ গ্রামের বাড়ি বরিশালের রাজাপুর থানাধীন টিংরি গ্রামে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, মামলা হয়নি। আজ মামলা গ্রহণ করা হবে। আর নিহতের শরীরে তেমন কোনো মারধরের আঘাত দেখা যায়নি। তবে হাতে ক্ষত চিহ্ন দেখা দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।