কাউন্সিলর পদে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী : আজীবন বহিষ্কারের হুমকি

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বরিশাল প্রতিনিধি,শনিবার, ২০ মে ২০২৩ :বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে না হলেও কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী। তাদের দাবী স্থানীয় নির্বাচনে জনগণের চাহিদায় তারা ভোটে দাঁড়িয়েছেন।

Advertisement

এদিকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের হুমকি দেয়ায় ৩ প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন বলে ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়েছেন। যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতৃবৃন্দ।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী না দিলেও ১৪ টি ওয়ার্ড থেকে ২০ জন বিএনপির নেতাকর্মী কাউন্সিলর পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। যার মধ্যে ৫ জন রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে। এছাড়া বাকীরা কেউ রয়েছেন ওয়ার্ড কমিটি, কেউবা অঙ্গসংগঠন অথবা সাবেক কমিটির পদধারী।

এদের মধ্যে রয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর সাইদুর রহমান মামুন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মঈনুল হক, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান টিপু, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য বর্তমান কাউন্সিলর সেলিম হাওলাদার, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বর্তমান কাউন্সিলর হারুন অর রশিদ ও যুবদলের সহসভাপতি রিঙ্কু, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সিদ্দিক, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাবের আব্দুল্লাহ সাদী, জেলা তাতী দলের সাবেক সভাপতি মোহন, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল হক, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব জিয়াউল হক মাসুম। যদিও জিয়াউল হক মাসুম গত ১ মে দল থেকে পদত্যাগ করেছে বলে জানা গেছে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক কাউন্সিলর আমীনুল ইসলাম আমীন, ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মহানগর বিএনপির সদস্য সাবেক কাউন্সিলর আ ন ম সাইফুল আহসান আজীম, তার স্ত্রী মহানগর মহিলা দলের সভাপতি শিল্পী বেগম, জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মো হাবিবুল্লাহ, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাবেক কাউন্সিলর ফিরোজ আহমেদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য বর্তমান কাউন্সিলর জাহানারা বেগম, সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য সেলিনা পারভিন এবং সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য রাশিদা পারভিন।

মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর থেকেই এসব নেতাকর্মীকে নির্বাচন থেকে সরে আসতে বলছিল দলীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।। যার প্রেক্ষিতে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম আমীন ও সদস্য আনম সাইফুল আহসান আজিম এবং হাবিবুল্লাহ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম আমীন বলেন, তিনি গত ৪০ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এর আগে তিনি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। জনগণ তাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে চায়। তাদের জন্য নির্বাচনে এসেছিলেন। তাছাড়া এটা কোনও জাতীয় নির্বাচনও নয়। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকও ব্যবহার হয়না। তাই তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার দলের নেত্রী কারাবন্দী অবস্থায় রয়েছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। সেই অবস্থায় নিজের আবেগকে দমিয়ে রেখে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দকেও মনোনয়ন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মহানগর বিএনপির সদস্য সেলিম হাওলাদারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান টিপুর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার মহানগর বিএনপির সদস্য এবং দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাহিদুর রহমান রিপন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যারা এখনো মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেনা তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

মহানগর বিএনপির সদস্য সচীব মীর জাহিদুল কবির বলেন, যেখানে দল থেকে সব ধরনের নির্বাচন থেকে বিরত থাকা হয়েছে, এর আগে ইউনিয়ন নির্বাচনে পর্যন্ত অংশ নেয়া হয়নি, সেখানে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনও কথাই নেই। যারা স্থানীয় নির্বাচন বলে কৈফিয়ত দিচ্ছে তারা লোভে পরে নিজ স্বার্থে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছিল তাদের ২৯ জনকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। যদি তারা নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে বরিশালের ক্ষেত্রেও হাইকমান্ড থেকে এ ধরনের নির্দেশ আসতে পারে।

Advertisement

উল্লেখ্য মহানগর বিএনপির সদস্য সচীব মীর জাহিদুল কবির নিজেও বর্তমানে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর রয়েছেন। তবে তিনি এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। এছাড়া মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক প্যানেল মেয়র সাবেক কাউন্সিলর আলতাফ মাহুমদ সিকদার, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক প্যানেল মেয়র সাবেক কাউন্সিলর কেএম শহিদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউদ্দিন সিকদার এবার নির্বাচনে অংশ নেননি।