গোপালগঞ্জে সোনালী ব্যাংকে লেনদেন বন্ধ : ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

SHARE

1521গোপালগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় চারদিন ধরে সার্ভার সমস্যার কারণে লেনদেন ও ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। গত রোববার থেকে ব্যাংকে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বেতন ভাতা তুলতে না পেরে আর্থিকভাবে চরম সঙ্কটে পড়েছেন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা। দেখা দিয়েছে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে কেউ তা বলতে পারছেন না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যাংকের এ শাখা থেকে যোগাযোগ করা হলে তারা বার বার ধৈর্য্য ধরতে বলেন।

বুধবার সকালে ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে কোনো লেনদেন হচ্ছে না। ইন্টারকানেকশন না থাকায় শত শত লোক বেতন ভাতার চেক জমা দিয়ে টাকা তুলতে না পেরে অসহায়ের মতো অপেক্ষা করছেন। ব্যাংকের শাখা কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো জবাব দিতে পারছেন না।

গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট খোলা ও পে- অর্ডার করা সম্ভব হচ্ছে না। চালান গ্রহণ করা হলেও ক্যাশ ক্লোজ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এটিএম কার্ড অকার্যকর পড়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে কিছু সময়ের জন্য নেটওয়ার্ক পাওয়া গেলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। ফলে কার্যক্রম চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। গত মঙ্গলবার সারা দিনই এ শাখায় কোনো ব্যাংকিং কার্যক্রম হয়নি। লোকজন গ্রহকসেবা নিতে এসে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছে।

মাসের প্রথমদিকে এক হাজার থেকে দেড় হাজার গ্রাহক প্রতিদিন বেতনের টাকা তুলতে আসেন। কিন্তু এ সপ্তাহে টাকা তোলার চেক জমা দিয়ে পোস্টিং না হওয়ার কারণে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, বে-সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিকক্ষ-কর্মচারীরা টাকা নিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। এছাড়া পেনশন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ও  প্রতিবন্ধী ভাতা তোলা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন পেনশন ভোগী ও ভাতা প্রাপ্তরা। তাদের দুর্ভোগ এখন চরমে।

হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে রোগী রেখে ব্যাংক থেকে চিকিৎসা খরচের টাকা তুলতে এসে না পেয়ে হাহকার করছেন রোগীর স্বজনরা।

গোপালগঞ্জ জেনারেল  হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রত্না বালা বৈরাগী বলেন, তিনদিন ধরে তিনি চেক জমা দিয়েও টাকা তুলতে পারছেন না। বাজার ঘাট, ছেলে-মেয়েদের স্কুলের বেতন ও বাড়ি ভাড়া দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি এখন চরম দূরাবস্থার মধ্যে আছেন।

গোপালগঞ্জ শহর থেকে ২০ কি.মি. দূরে চন্দ্রদীঘলীয়ার গৃহবধূ শিরীন সুলতানা শোভা বলেন, জমি দলিল করার জন্য তিনি খরচের টাকা তুলতে ৪ দিন ধরে ব্যাংকে এসেও টাকা তুলতে পারছেন না। কবে টাকা তুলতে পারবো ব্যাংক থেকে তার কোনো সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।

ব্যাংকের গোপালগঞ্জ প্রধান শাখা ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক ও প্রিন্সিপাল অফিসার গাজী কামাল হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় সার্ভারে সমস্যার কারণে গ্রাহকদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সার্ভার নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকের সকল শাখায় এ সমস্যা বিদ্যমান। সার্ভার মেইনটেন্যান্স ও বিকল্প সার্ভারের কাজ চলছে। মাঝে মধ্যে নেটওয়ার্ক পাওয়া গেলে সেটুকু সময়ই গ্রাহক সেবা দেয়া হচ্ছে। অসুবিধায় পড়ে গ্রাহকরা আমাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করছেন। আমরা তা সহ্য করছি। ধৈর্য্য ধরতে হবে। অবিলম্বে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।