রাজধানীর বিহারি ক্যাম্পগুলোতে বিদ্যুৎ বিলের নামে চাঁদাবাজি! (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : রাজধানীর বিহারি ক্যাম্পগুলোতে ২১৩ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। আদালত বিল পরিশোধে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বললেও ঘরে ঘরে মিটার না থাকায় বিল আদায় করতে পারছে না বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো। আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছে না। এ সুযোগেই প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা বিল হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র।

রাজধানীর মিরপুরের কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্প। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ক্যাম্পবাসী। অভিযোগ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ও পানির বিল আদায়ের।

Advertisement

ক্যাম্পের বাসিন্দারা বলেন, বিল চেয়ারম্যানের লোকজন তোলে। এখানে বিদ্যুৎ ও পানির সব লাইন অবৈধ। কিন্তু তারা প্রতি ঘর থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে। ব্যবসা করছে তারা।

যেখানে ক্যাম্পগুলো থেকে গত ছয় বছর কোনো বিলই পায়নি ডেসকো-ডিপিডিসি, সেখানে অতিরিক্ত বিলের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? ক্যাম্পগুলোতে বকেয়া বিলের পরিমাণ ২১৩ কোটি টাকা।

মিরপুর বার ক্যাম্পের নন লোকাল রিলিফ কমিটির জালালউদ্দিন ভন্টু বলেন, ‘বিদ্যুতের জন্য আমাদের তার আনতে হয়। তারপর আমাদের মিস্ত্রি খরচ হয়। ভাড়া পাই ১২ থেকে ২০ টাকা। আমার অফিসে আসেন, সব দেখিয়ে দেব।’

প্রতি ঘরে একটি বাল্ব ও একটি ফ্যান চলার কথা থাকলেও ঘরে ঘরে রয়েছে টিভি-ফ্রিজসহ ভারী যন্ত্রাংশ। ক্যাম্পের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চালানো নিয়ে মাঝেমধ্যেই হচ্ছে সংঘর্ষ। সাধারণ ক্যাম্পবাসীরা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে তাদের ঘরবাড়ি পর্যন্ত ভেঙে দিচ্ছে প্রভাবশালীরা।

বাসিন্দারা বলেন, একটা মেশিন চলত, গায়ের জোরে সবাইকে হয়রানি-মিথ্যা মামলা। এখানে দুতলা বাড়ি চলে না। তা সত্বেও জোরপূর্বক তিনি এটা বানিয়েছেন। যেকোনো সময় রানা প্লাজার মতো এটা ধসে যেতে পারে। তার সঙ্গে তিনি জোরপূর্বক মেশিন বসিয়েছে।

Advertisement

ক্যাম্পের ভিতরে ছোট-বড় কারখানাও রয়েছে বেশ কয়েকটি, আছে বরফ মিলও।

অভিযোগ আছে, চেয়ারম্যান-মেম্বারের নামে মিরপুর ও মোহাম্মদপুরের ৩৫টি ক্যাম্প থেকে বিদ্যুৎ বিলের নামে চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র। বিল আদায় ঠেকাতে হাইকোর্টে রিটও দায়ের করেন বিহারি নেতা সাদাকাত খান ফাক্কু।

উর্দু স্পিকিং পিপলস ইয়ুথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্টের সভাপতি ফাক্কু বলেন, ক্যাম্পের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বিদ্যুৎ বিল হাতে নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজি করছেন। আমি যদি প্রতিবাদ করতে যাই, তাহলে আমার বিরুদ্ধেও মামলা-হামলা হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল হক জানান, বিদ্যুৎ বিল আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই বিলটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিশোধ করবে। এর পরে আর করবে না কারণ তাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করে উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য যার যার বিল তাকেই পরিশোধ করতে হবে।

অবৈধ কারখানার উচ্ছেদে সহায়তা দিতে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ক্যাম্পের বিদ্যুৎ বিল কে দেবে, তা নিয়ে আদালতে পাঁচ বছর টানাপোড়েনের পর অবশেষে আদেশ এসেছে সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে ঘরে ঘরে মিটার না থাকায় ডেসকো কিংবা ডিপিডিসি এখনও বিদ্যুৎ বিল আদায় করতে পারছে না। আর এ সুযোগেই নিজেদের পকেট ভারী করে নিচ্ছে একটি চক্র।