মালিতে জিম্মি সঙ্কটের অবসান : নিহত ২৭

SHARE

ইসলামী জঙ্গীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর রক্তাক্ত সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে মালিতে জিম্মি সঙ্কটের 2অবসান ঘটেছে। তবে ওই সেনা অভিযানে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে ৩ জন হামলাকারীও রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাজধানী বামাকোর কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাঁচতারা র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে হামলা চালিয়ে হোটেলের ১৭০ জনকে জিম্মি করেছিল সন্ত্রাসীরা। জিম্মি উদ্ধার অভিযানে মালির নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করেছে ফরাসী, মার্কিন এবং জাতিসংঘের বিশেষ সেনারা।
আল কায়দার সঙ্গে সম্পৃক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আল মৌরাবিতুন’ ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে আল জাজিরা জানিয়েছে। তারা আফ্রিকার ইমারাত আল সাহারা এবং আল কায়দা ইন দা ইসলামিক মাগরেব এই দুটি জঙ্গি গোষ্ঠীর হায়তায় পাঁচতলা হোটেলটিতে হামলা চালিয়েছিল। বামাকো কারাগারে আটক জঙ্গিদের ছাড়িয়ে আনতেই তারা এ হামলা চালিয়েছিল বলে আল জাজিরা কার্যালয়ে প্রেরিত এক ভিডিও বার্তায় জানানো হয়েছে।
স্থানীয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্তত ১০ জন বন্দুকধারী ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে গুলি চালাতে চালাতে হোটেল ভবনে ঢোকে। তবে হোটেল পরিচালনাকারী কোম্পানি বলেছে, হামলাকারী ছিল দুইজন।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বন্দুকধারীরা কূটনৈতিক লাইসেন্স প্লেট লাগানো একটি গাড়িতে করে আসে। তারা মুখোশ পরা ছিল। হোটেলের প্রবেশপথে নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের থামানোমাত্র গোলাগুলি শুরু হয়।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা হোটেলের বেজমেন্টে ১২টি লাশ এবং দ্বিতীয় তলায় ১৫টি লাশ দেখেছে বলে জানিয়েছেন এক জাতিসংঘ কর্মকর্তা। নিহতদের মধ্যে বেলজিয়ামের ওয়ালোনিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্টের এক সদস্যও আছেন।
হোটেলটিতে বিদেশি ব্যবসায়ী এবং বিমানের কর্মীরাই বেশি থাকতেন। হামলাকারীরা প্রাথমিকভাবে কুরআন পড়তে পেরেছে এমন জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে। পরে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে আরও জিম্মিকে মুক্ত করে।
২০১২ সালে মালির উত্তরাঞ্চল দখল করেছিল জঙ্গিরা। এদের কারও কারও সঙ্গে আল কায়েদার যোগ ছিল। ফরাসি বাহিনী সামরিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে উৎখাত করলেও মাঝে মধ্যেই সেখানে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
গত অগাস্টে সন্দেভাজন জঙ্গিরা মালির মধ্যাঞ্চলের এক শহরের একটি হোটেলে অতিথিদের জিম্মি করে জাতিসংঘের পাঁচ কর্মীসহ ১৩ জনকে হত্যা করে। আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট জঙ্গিরা দেশটির উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজধানী বামাকো দখলের হুমকি দেওয়ার পর ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সেখানে সেনা মোতায়েন করে ফ্রান্স।
শুক্রবারের এ হামলার পর মালির সেনা, পুলিশ এবং বিশেষ বাহিনীসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী ও ফরাসি সেনারা ঘটনাস্থলে যায়। ভবনের বিভিন্ন তলায় জিম্মিদের মুক্ত করার অভিযানে মালির বিশেষ বাহিনীকে সহায়তা দেয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী।