২০ হাজার আফগানকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাজ্য

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,বুধবার, ১৮ আগস্ট ২০২১ : আফগানিস্তানের ২০ হাজার নাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তবে এদের মধ্যে নারী, শিশু ও ধর্মীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানানো হয়েছে।

বুধবার (১৮ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রথম বছর পাঁচ হাজার আফগান যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া ৫ হাজার আফগান দোভাষী ও যুক্তরাজ্যের হয়ে কাজ করা কর্মীদেরও দেশটিতে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানা গেছে। নতুন এই প্রকল্পের আওতায় নারী, শিশু ও যাদের বেশি প্রয়োজন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি।
এর আগে মার্কিন সরকারের অনুরোধে দুই হাজার আফগান শরণার্থীকে গ্রহণ করতে যাচ্ছে উগান্ডা। সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে বিবিসি এমন খবর দিয়েছে।
আফগানিস্তান তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে দেশটির দোভাষীরা। রোববার সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান কাবুল দখলের পর থেকে ভিটেমাটি ছাড়তে লাখ লাখ আফগান ভিড় করছে বিমানবন্দরে। যুক্তরাষ্ট্রসহ ৬০টির বেশি দেশ তাদের জায়গা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। এর মাঝে ২০ হাজার আফগানকে আশ্রয় দেওয়ার কথা জানাল যুক্তরাজ্য। মঙ্গলবার বরিস জনসনের প্রশাসন এই প্রতিশ্রুতি দেয় বলে জানা গেছে। খবর আল-জাজিরার।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী বছরগুলোতে প্রায় ২০ হাজার আফগান নাগরিককে দেশটিতে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে।
প্রথম বছর ৫ হাজার আফগান যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া ৫ হাজার আফগান দোভাষী ও যুক্তরাজ্যের হয়ে কাজ করা কর্মীদেরও দেশটিতে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানা গেছে। নতুন এই প্রকল্পের আওতায় নারী, শিশু ও যাদের বেশি প্রয়োজন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি।
মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এদিকে আফগান সংকট নিয়ে বুধবার (১৮ আগস্ট) বৈঠকে বসছেন যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতারা।
আফগানিস্তানে তালেবান গোষ্ঠী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে ক্ষমতা দখলের পর। নতুনভাবে সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে তালেবানের পরবর্তী শাসনব্যবস্থা কেমন হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দেশটির হাজারো মানুষ।
বুধবার (১৮ আগস্ট) দিন শেষে ৫০০ আফগানের প্রথম গ্রুপটি পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। নতুন আসা আফগানদের আইসোলেশন কেন্দ্রে পাঠানোর আগে তাদের সবার করোনার পরীক্ষা করা হবে।
 
উগান্ডার শরণার্থী বিষয়কমন্ত্রী এসথের আনইয়াকুন এ সব তথ্য দিয়েছেন। তবে এসব শরণার্থীকে বহনের অর্থ সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
 
শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে উগান্ডার। এখনও সেখানে ১৩ লাখ লোক আশ্রয় নিয়েছেন আছেন, যারা বিপর্যয় ও সংঘাত থেকে জীবন বাঁচাতে দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন। আফ্রিকার যেকোনো দেশের তুলনায় উগান্ডায় শরণার্থীর সংখ্যা বেশি।
 
এদিকে আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তালেবান বলেছে, তাদের সব বিরোধীকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। কাবুলে পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতাগ্রহণের পর মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) প্রথমবার কোনো সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এমন দাবি করেছেন।
 
তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ। সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন আমাদের নেতা। ইসলামি আইন অনুসারে নারীদের কাজের সুযোগ দেওয়ায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চাওয়ার দাবি করে জবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, আমরা দেশের ভেতরে কিংবা বাইরে কোনো শত্রু চাই না।
 
গত ২০ বছর ধরে তালেবানের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে আসা জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমেই ক্যামেরার সামনে এলেন।
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মী আর ক্যামেরার সামনে তিনি বলেন, ২০ বছর সংগ্রামের পর দেশকে আমরা মুক্ত করতে পেরেছি, বিদেশিদের বহিষ্কার করেছি। পুরো জাতির জন্য আজ একটি গৌরবের মুহূর্ত।
 
মুখপাত্র আরও বলেন, আমরা কাবুলে বিশৃঙ্খলা দেখতে চাইনি। আমাদের পরিকল্পনা ছিল কাবুলের গেটে থামার, যাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায়।
এ ছাড়া তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা আবদুল গনি বেরাদার দুই দশক পর তার নিজ দেশ আফগানিস্তানে পা রেখেছেন। বছর তিনেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে পাকিস্তানের কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন।
 
তালেবানের আফগান রাজধানী কাবুলের দখলের পর মঙ্গলবার তিনি দেশটিতে পৌঁছান। নতুন ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানের নেতা কে হবেন; তা নিয়ে অস্পষ্টতা থাকলেও তালেবান আন্দোলনের সবচেয়ে পরিচিত মুখের একটি বেরাদার।
তিনি যখন কান্দাহারে পৌঁছান, তখন প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে বসেছেন তালেবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ। তবে তালেবানের আধ্যাত্মিক নেতা মোল্লাহ হাবিবুল্লাহ আকুনজাদাকে এখনও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
১৯৯৪ সালে তালেবানের প্রতিষ্ঠাকালীন চার নেতা নেতার অন্যতম বেরদার। এরপর ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি নেতৃত্বের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে মার্কিন আগ্রাসন ও তালেবানের পতনের পর তিনি পাকিস্তানে পালিয়ে যান।