গুলশান-বনানীতে সুন্দরী রমণীদের আনাগোনা ও পার্লার উধাও!

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বুধবার, ১১ আগস্ট ২০২১ : সম্প্রতি চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ বিতর্কিত মডেল মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর অভিজাত এলাকায় গড়ে ওঠা অধিকাংশ ম্যাসাজ-বিউটি পার্লারগুলোতে তালা ঝুলছে। বিশেষ করে গুলশান-বনানীর ম্যাসাজ ও বিউটি পার্লারগুলোতে। অভিযোগ রয়েছে এসব বিউটি পার্লার-ম্যাসাজগুলো পুরুষদের শরীর ম্যাসাজের নামে চলে নানান অসামাজিক কর্মকাণ্ড। এছাড়াও এসব এলাকার তারকা হোটেলগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজরদারির ফলে কমেছে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের সঙ্গী হওয়া সুন্দরী তরুণীদের আনাগোনা। পার্টি হাউজ ও বিভিন্ন অসামাজিক কাজের ‘সেফ প্লেস’ হিসেবে পরিচিত কয়েকটি বাসার বাসিন্দারাও দিয়েছেন গাঢাকা।

গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে গুলশান-বনানী এলাকার ম্যাসাজ ও বিউটি পার্লারের তালিকা। এর মধ্যে কেবল গুলশানেই এমন ৩০টি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যার ১০টিতে অনৈতিক কাজ হয়। এসব অনৈতিক কাজে থাই নাগরিকসহ বিদেশিরাও জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


গত ১ আগস্ট দিবাগত রাতে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার হয় মডেল পিয়াসা ও মোহাম্মদপুর থেকে মৌ। এরপর ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় বনানীর বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন অভিনেত্রী পরীমনি। গ্রেফতার হন তাদের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীও। তাদের বিরুদ্ধে মাদকসহ নানান অবৈধ কারবারের জন্য মামলা হয়েছে। মূলত তখন থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এ পাড়ায়। নিজেদেরকে বাঁচাতে বন্ধ করে দেয়া হয় তাদের পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ‘সেফ প্লেস’ হিসেবে খ্যাত এসব ফ্ল্যাট বাসায় প্রভাবশালী ধনীর দুলালদের ঘনিষ্ঠ হতো ‘ব্ল্যাকমেইলিং’ চক্রের তরুণীরা। শুধু তরুণরাই না, সেখানে যাতায়াত রয়েছে অনেক নামি-দামি ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদেরও। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোপন ক্যামেরা দিয়ে তাদের বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করা হতো। যেগুলো দিয়ে এই চক্রটি ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিত মোটা অংকের অর্থসহ নানান অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা। এছাড়াও অনেক সময় বিভিন্ন বাসাতেও হতো পার্টি। এসব পার্টিতে ‘পার্টি গাল’রা অতিথিদের সঙ্গ দিয়ে সেগুলোর ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ করত। যা দিয়ে পরবর্তীতে ফাঁদে ফেলা হতো।

গোয়েন্দা তথ্য সূত্রে জানা যায়, গুলশান-বনানী এলাকায় এমন অন্তত ২৩টি বাসা রয়েছে। যার অধিকাংশই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাম্প্রতিক বিভিন্ন অভিযানের প্রেক্ষিতে এখন বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বনানীর ১১ নম্বর সড়ক ঘিরেই গড়ে উঠেছে ১৩টি সিসা লাউঞ্জ। এদের কয়েকটি অবৈধভাবে মাদক কারবারেও জড়িত। মূলত মডেলরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই এই লাউঞ্জগুলো বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে জানান, অবৈধভাবে মাদক গ্রহণ ও বেচাবিক্রির বিরুদ্ধে সবসময় আমাদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। সম্প্রতি অভিনেত্রী পরীমনিকে গ্রেপ্তার যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। সিসা লাউঞ্জের আড়ালে কেউ অবৈধ কর্মকাণ্ড ও মাদক কারবারে জড়িত হলে তাদেরকেও ছাড়া দেওয়া হবে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, রাজধানীতে ম্যাসাজ পার্লার, বিউটি পার্লার, সিসা লাউঞ্জ বা পার্টি হাউস যেই নামই আসুক না কেন, কোনো অনৈতিক বা অপরাধমূলক কাজের খবর পেলে আমার সঙ্গে সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। যারাই জড়িত থাকুক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযানের মাধ্যমে অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।