পাকিস্তান শিমলা চুক্তি ভঙ্গ করেছে : মেনন

SHARE

815বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সিমলায় যে চুক্তি হয়েছিল তার মূল কথা ছিলো স্ব স্ব দেশ চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। সে নিরিখে বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন প্রণয়ন ও আদালত গঠন করে। চুক্তি অনুসারে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের মধ্যে চিহ্নিত ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দায়িত্ব পাকিস্তান সরকারের উপর অর্পিত হলেও তারা তা আজও না করে একদিকে শিমলা চুক্তিকে ভঙ্গ করেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার পর শিমলা চুক্তি লঙ্ঘিত হয়েছে বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তান মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। যুদ্ধাপরাধীরা কোনো অপরাধ করেনি বরং রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলনে পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন এরকম যারা বলেন তাদেরকে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক গঠিত হামিদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট পড়ে দেখার অনুরোধ করেন।

সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘স্বজনদের স্মৃতিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ১২টি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্যদিয়ে সে উদ্যোগই শুধু ভেস্তে যায়নি, পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ১২ হাজার অপরাধীকে ক্ষমা করে দেন।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে সাংবাদিকরাই প্রথম বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার দাবি করেছিলেন। সে সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের অনুজ সাংবাদিক জহির রায়হানকে সদস্যসচিব করে এ সংক্রান্ত একটি কমিটিও গঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জহির রায়হান নিখোঁজ হওয়ায় সে প্রক্রিয়া আর অগ্রসর হয়নি।

স্বাধীন বাংলাদেশকে নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য করে দেয়ার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়। আজকের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শুধু বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ নয় তাদের চিন্তা-চেতনাকে অনুসরণ করতে হবে।

ডিআরইউ সভাপতি জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য ওয়ারসেত হোসেন বেলাল, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য প্রফেসর আনোয়ারা বেগম, শহীদ বুদ্ধিজীবী আবদুস সাত্তারের ছেলে সাইফুল আলম, শহীদ বুদ্ধিজীবী কাজী শামসুল হকের ছেলে কাজী সাইফুদ্দিন আব্বাস, ডিআরইউ সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী ও ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ।