ঘরে ঘরে তথ্য সেবা পৌঁছে দিচ্ছেন তথ্য আপা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,নীলফামারী প্রতিনিধি,০৮ মার্চ : নীলফামারীতে গ্রামীণ নারীদের বাড়ি গিয়ে তথ্য সেবা পৌঁছে দিচ্ছেন তথ্য আপা। গত বছরের জানুয়ারী থেকে নীলফামারী পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে।

সরকারী নানান সুযোগ সুবিধা, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জেন্ডার, কৃষি, ব্যবসা ছাড়াও আইনি সেবা নিয়ে হাজির হচ্ছেন তথ্য আপারা। করা হচ্ছে উঠোন বৈঠকও। যেখানে ল্যাপটপের মাধ্যমে নারীদের দেখানো হচ্ছে ডিজিটাল সুবিধা গ্রহণের প্রক্রিয়া।

ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পটি (২য় পর্যায়)।

সদর উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রতি মাসে অন্ততটি তিনটি উঠোন বৈঠক করা হয় কোন না কোন ইউনিয়নে। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারীদের জানানো হয় সরকারী নানান তথ্য।

উঠোন বৈঠকে সরকারী বিভিন্ন দফতর প্রধানরা অংশ নিয়ে দিয়ে থাকেন তাদের সব কার্যক্রম। যেটি গ্রহণ করার আহবান জানান তারা।
এক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানে স্কাইপির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ঠ দফতর প্রধান কিংবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা জানতে পারছেন।

কুন্দপুকুর ইউনিয়নের শালহাটি গ্রামের জমিরন বেগম (৬৫) নামের এক নারী বলেন, ‘আগোত মুই জানুছু না কোনঠে বয়ষ্ক ভাতা পাওয়া যায়। তথ্য আপা (হেলেনা আকতার) মোর বাড়িত আসি কয়া গেইছে। কয়দিন আগোত বয়ষ্ক ভাতার জন্যে কাগজ পত্র জমা দিছু।’

চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের তুলো বালা (৬৫) জানান, ‘মোর কাহো নাই। অসুস্থ অনেক দিন থাকি। তথ্য কেন্দ্রোত যেয়া ডায়াবেটিস চেক করি দেখুছু। পরে অফিসের আপা (ফাতেমা বেগম) সমাজ সেবা অফিসোস নিগি স্যারের সাথে কথা কয়া দিছে। ‘

তথ্য সেবা সহকারী হেলেনা আকতার জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদের সাথে কথা বলে তাদের সমস্যার কথা শুনি আগে। এরপর তাদের প্রয়োজন অনুসারে সংশ্লিষ্ঠ দফতরের সাথে যোগাযোগ তৈরি করে দেই। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, চাকুরীর আবেদন করা ছাড়াও সরকারের অনলাইন সেবাগুলো দেখানো হয়। অনেক সময় আমাদের সহযোগীতা নিয়ে তারা বাড়িতেই এগুলো করতে পারছেন।

সদর উপজেলার তথ্য সেবা কর্মকর্তা ফাতেমা বেগম বলেন, প্রতিটি বাড়ি ভিজিট করার পর আমরা একটি উঠোন বৈঠক করে থাকি। সেখানে নূন্যতম শতাধিক নারী উপস্থিত থাকেন। জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি এই বৈঠকে বিভিন্ন দফতর প্রধান তাদের কার্যক্রম নিয়ে অবহিত করে থাকে।

তিনি বলেন, নারীদের জন্য সরকারী ভাবে তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে উপজেলায়। এখানে ব্লাড প্রেসার চেকআপ, ওজন পরিমাপ এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয় বিনামূল্যে। এছাড়া এখানে সার্বক্ষনিক ইন্টারনেট সংযোগ থাকে। নারীরা এটি ব্যবহার করে সরকারী নানান কাজে ব্যবহার করতে পারেন বিনামূল্যে।

তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) তত্বাবধানে এসব কাজ করে থাকি আমরা।

জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রকল্প এলাকাধীন উৎসাহী মহিলাদের উঠোন বৈঠক ও সেলফ হেল্প গ্রুপের মাধ্যমে সংগঠিত করা হবে এবং এরাই হবে মাইন্ড ইন্সপ্যায়ার টু ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট দলের সদস্য।
‘জাতীয় কৃতিত্ব অর্জনে প্রতিশ্রুতিমনা’ এ সদস্যগণ আইটিইএস, ই-লানিং, ম্যার্চেন্ডাইজিং এবং অন্যান্য কারিগরি কাজে মহিলাদের প্রতীকী জাগরণ হিসেবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, এছাড়াও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রতি ইউনিয়নে একটি করে পুষ্টি গ্রাম করা হবে। যাতে গ্রামীন নারীরা সেখানে পুষ্টির অভাব দূর করতে তথ্য সহায়তা কাজে লাগাতে পারেন।