আজ পবিত্র হজ : লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাত ময়দান

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ঢাকা প্রতিনিধি,১০ আগস্ট : আজ পবিত্র হজ। ভোর থেকে আরাফামুখী লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান। বিশ্ব মুসলিম সম্মিলনের এক সামিয়ানায় সমবেত হতে দলে দলে সবাই আরাফার দিকে ছুটছে আর লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত করে তুলছে আরাফাতের অলিগলি ও প্রান্তর।মিনায় অবস্থান নেয়ার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হয়েছে পবিত্র হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার সারা দিন ও রাত তারা মিনায় কাটান ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মশগুল ছিলেন জিকির ও তালবিয়াতে।

নামাজ আদায় করেন জামাতের সঙ্গে। সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজিরা দিয়ে আত্মশুদ্ধি, মাগফিরাত ও রহমত চাইতে আসা এই মুসলমানরা আজ জড়ো হবেন আরাফাতের ময়দানে, যাকে হজের মূল অনুষ্ঠান বলা হয়।সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হাতিম বিন হাসান কাদি সৌদি গেজেট ও এএফপিকে জানান, এ বছর প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি হজব্রত পালন করবেন। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন ১৮ লাখ ব্যক্তি। বাংলাদেশি রয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার।এবার যারা হজে এসেছেন তারা আজ সূর্যোদয়ের পর সমবেত হবেন মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে বিদায় হজের স্মৃতি জড়িত আরাফাতের ময়দানে। তিন দিকে পাহাড়ঘেরা প্রায় চার বর্গমাইল আয়তনের এ বিশাল সমতল মাঠের এক প্রান্তে জাবালে রহমত। অর্থাৎ রহমতের পাহাড়। ১৪শ বছরের বেশি সময় আগে এখানেই ইসলামের শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) দিয়েছিলেন তার বিদায় হজের ভাষণ।আরাফাতের ময়দানে বা এর পাশের পাহাড়ে সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নিয়ে আজ মুসল্লিরা ‘হে আল্লাহ, আমি হাজির’ জানিয়ে অতীতের সব গুনাহ মাফের জন্য কায়মনোবাক্যে ফরিয়াদ জানাবেন মহান আল্লাহর কাছে।কেঁদে বুক ভাসিয়ে চাইবেন আল্লাহর রহমত, জীবনের বাকি দিন ইসলামের পথে চলার সহায়তা। আকুতি জানাবেন প্রকৃত সফলতা অর্জনের, জান্নাতের বাসিন্দা হওয়ার। মাঠ, পাহাড়, পথ- সবখানে আজ থাকবে সেই রোনাজারি। মসজিদে নামিরায় তারা জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন। এ নামিরা থেকেই দেয়া হবে হজের খুতবা।এ আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজ পূর্ণ হয় না। তাই হজে এসে যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আজ আনা হবে এখানে। ইসলামী রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিনটি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হল হজ।সারা দিন আরাফাতে অবস্থানের পর বিকালে মুসল্লিরা পা বাড়াবেন মিনার পথে। প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বেন তারা। সেখানেই রাতে খোলা আকাশের নিচে থাকবেন। এটি ওয়াজিব। এ সময়েই তারা প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাথর সংগ্রহ করবেন, যা মিনার জামারায় প্রতীকী শয়তানকে উদ্দেশ্য করে ছোড়া হবে।মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায়ের পর হাজিরা কেউ ট্রেনে, কেউ বাসে, কেউ হেঁটে মিনায় ফিরে নিজ তাঁবুতে ফিরবেন। মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে (ন্যাড়া) গোসল করবেন।এর পর পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। এটি হজের আরেকটি ফরজ। কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাঈ (সাতবার দৌড়ানো) করবেন। মিনায় তারা যতদিন থাকবেন ততদিন প্রতীকী শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারবেন। সবশেষে কাবা শরিফ বিদায়ী তাওয়াফের (ওয়াজিব) মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।