কাদেরের অবস্থার উন্নতি, নেয়া হচ্ছে না সিঙ্গাপুর : চিকিৎসক

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ঢাকা প্রতিনিধি,০৪ মার্চ : হৃদরোগে আক্রান্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তাই তাকে আপাতত সিঙ্গাপুরে নেয়া হচ্ছে না।  গতকাল রবিবার সিঙ্গাপুর থেকে আসা চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তিনি হাত-পা নাড়ছেন, প্রস্রাব হচ্ছে, যেটা দুপুরের দিকে একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। তাই আপাতত তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হচ্ছে না।

সাংবাদিকদের ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানান, ওবায়দুল কাদের তাকিয়ে সবকিছু দেখছেন, কথা বলতে পারছেন না। তাকে সবকিছু চেনানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আইসিইউর সুবিধা নেই উল্লেখ করে তিনি জানান, সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে যে চার সদস্যের দল এসেছে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন। তারাসহ এখানকার চিকিৎসকরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেয়া যাবে না। কারণ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আইসিইউর সুবিধা নেই। আর তার যে পরিস্থিতি সে অনুসারে আগের চেয়ে উন্নতি হলেও আইসিইউ সেবা ছাড়া পরিবহন করানো বা আইসিইউ ছাড়া রাখা যাবে না।ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানান, অবস্থার আরও উন্নতি হলে তখন তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে পরিবহন করানো যাবে। এখন এখানেই নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
এর আগে বিকেলে ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কের জানাতে ব্রিফিং করেন বিএসএমএমইউ’র চিকিৎসকরা।  এসময় তারা জানান, ওবায়দুল কাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন। তিনি চোখ খুলেছেন বলেও জানান তারা।রবিবার সকালে বুকে ব্যথা অনুভূত হলে দ্রুত ওবায়দুল কাদেরকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিসিইউ) ২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন তিনি।  সকাল থেকেই তাকে দেখতে হাসপাতালের ডি-ব্লকের সামনে ভিড় করেন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।রবিবার বেলা ৩টা ৩৪ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী। ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে তিনি বেরিয়ে যান।  বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে হাসপাতালে আসেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পৌনে ৫টার দিকে তিনি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসেন।বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, ওবায়দুল কাদেরের পাশে কিছু সময় কাটান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন তারা। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা এ সময় ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা এবং চিকিৎসার সার্বিক বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছেন বলে জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাসপাতালে ভিড় না করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন বলেও তিনি জানান।বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কনক কান্তি বড়ুয়া আরও বলেন, ‘আপনারা সকলকে জানিয়ে দেন, আমরা যেন নিরিবিলি তার চিকিৎসা করতে পারি। কেউ যেন ভিড় না করেন।’ওবায়দুল কাদের সাড়া দিচ্ছেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ডাক দিলে তিনি মিটমিট করে তাকিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ডাক দিলে বড় চোখ করে তাকিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।’

‘মোহাম্মদ নাসিম যখন তাকে ডাকেন তখনও তিনি চোখ খুলে কথা বলার চেষ্টা করেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে আলী আহসান বলেন, ‘তার বর্তমানে শারীরিক যে অবস্থা তাতে তাকে বিদেশে নেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যদি প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকেন, তাহলে আমরা অ্যালাও করতে পারি।’ ‘বিদেশে নেয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দফতর দেখছে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।