
গ্রেফতার কামাল পারভেজ মিলন ও তার সহযোগী। ছবি:ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),আইন আদালত প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার , ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ :
স্বর্ণের দোকানে কিভাবে চুরি করতে হয়— এ বিষয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন খুলনার কামাল পারভেজ মিলন (৪৬)। একাধিক পাসপোর্টধারী এই ব্যক্তি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন, এমনকি তার রয়েছে এলএলবি ডিগ্রি। পাশাপাশি একটি আইপি টেলিভিশনের সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দেন তিনি।
Advertisement

তবে সম্প্রতি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বাজারে স্বর্ণের দোকানে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন আলোচিত এই ব্যক্তি। চুরির ঘটনার দুই সপ্তাহ পর সহযোগী খলিল মৃধাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মিলন।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইমস অ্যান্ড অপারেশন) মো. লুৎফর রহমান জানান, গত ১৫ অক্টোবর রাতে ফরিদগঞ্জ বাজারের মা জুয়েলার্স নামের একটি স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে পৃথক অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কামাল পারভেজ মিলনকে খুলনা থেকে এবং খলিল মৃধাকে চাঁদপুর থেকে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, চোরচক্র এরইমধ্যে ১২ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করে দিলেও পুলিশের হাতে উদ্ধার হয়েছে ৭ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৫ লাখ টাকা। এরা দুজনেই আন্তঃজেলা চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব সাংবাদিকদের কাছে এই চুরির ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, কামাল পারভেজ মিলনের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার পিরোজপুর গ্রামে এবং খলিল মৃধা (৪০)-এর বাড়ি পিরোজপুরের ইন্দুরকান্দি গ্রামে।
Advertisement
প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

তবে খলিল মৃধা চাঁদপুর সদর উপজেলার শেখেরহাট এলাকার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে অবস্থান করতেন এবং এখান থেকেই চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজারের স্বর্ণের দোকানগুলো টার্গেট করতেন। কোথাও সুযোগ পেলে তিনি চুরির পরিকল্পনা নিয়ে অভিজ্ঞ চোর কামাল পারভেজ মিলনকে খবর দিতেন।
এইভাবে ১৫ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ বাজারের মা জুয়েলার্সে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটানো হয়।
দোকানের মালিক মন্টু কর্মকার জানান, সেদিন দোকান থেকে মোট ২৪ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছে।
পুলিশ সুপার আব্দুর রকিব বলেন, ‘ভারতে গিয়ে মিলন স্বর্ণের দোকানে কীভাবে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চুরি করতে হয়, সেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। দেশে ফিরে একটি আন্তঃজেলা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন তিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলএলবি ডিগ্রিধারী মিলন শুধু চুরি নয়, নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটাতেন এবং অতীতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও নির্বাচন করেছেন।’
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘চুরির ঘটনার পরপরই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান সরকারকে নিয়োগ করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় টানা দুই সপ্তাহের প্রচেষ্টায় আমরা এই দুই আসামিকে আটক করতে সক্ষম হই।’
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই আসামিই চুরির ঘটনা স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
চাঁদপুর জেলা পুলিশ জানিয়েছে, কামাল পারভেজ মিলনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি ও ডাকাতিসহ মোট সাতটি এবং খলিল মৃধার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার কামাল পারভেজ মিলন ও তার সহযোগী। ছবি:ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম


