(ভিডিও)সালমান শাহ হত্যা মামলা: এবার সামিরার মা’র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

SHARE

https://www.facebook.com/share/v/1C2KhJ5Qfv/

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (ভিডিও),আইন আদালত প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার , ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ :

ঢাকাই চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এতে তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হকের মা লতিফা হক লিও ওরফে লুসিকে (৭১)। এবার এ মামলায় তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

Advertisement

এ ব্যাপারে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রমনা থানা পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান এই আদেশ দেন। এর আগে গত ২৭ অক্টোবর সালমান শাহর সাবেক স্ত্রী সামিরা হক ও খলনায়ক আশরাফুল হক ডনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন এ ম্যাজিস্ট্রেট। এ নিয়ে মামলাটিতে তিনজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিলেন আদালত।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয় সালমান শাহর। তারপর শুরু হয় দীর্ঘ তদন্ত, যা প্রায় তিন দশক ধরে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে চলতে থাকে।

এরপর গত ২০ অক্টোবর ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক বাদীপক্ষের করা রিভিশন মঞ্জুর করে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২১ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন সালমান শাহর মামা মোহাম্মদ আলমগীর। মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামিরাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

সামিরা ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন— শিল্পপতি ও সাবেক চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুছি, খলনায়ক ডন, ডেবিট, জাভেদ, ফারুক, মে-ফেয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আব্দুস ছাত্তার, সাজু এবং রেজভি আহমেদ ফরহাদ (১৭)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে মোহাম্মদ আলমগীর উল্লেখ করেন, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তার বোন নিলুফার জামান চৌধুরী (নীলা চৌধুরী), বোনের স্বামী কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী এবং তাদের ছোট ছেলে শাহরান শাহ নিউ ইস্কাটনের বাসায় সালমান শাহর সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন, সালমান শাহ ঘুমাচ্ছেন।

কিছুক্ষণ পর প্রোডাকশন ম্যানেজার সেলিম ফোন করে জানান, সালমান শাহর কিছু হয়েছে। দ্রুত তারা বাসায় ফিরে দেখেন, সালমান শাহ শয়নকক্ষে নিথর পড়ে আছেন এবং কয়েকজন বহিরাগত নারী তার হাত-পায়ে তেল মালিশ করছেন। পাশের কক্ষে সামিরার আত্মীয় রুবি বসে ছিলেন।

Advertisement

প্রতিটি উপজেলায় সংবাদদাতা আবশ্যক। যোগাযোগ ০১৭১৪৪৯৭৮৮৫

সালমান শাহর মা চিৎকার করে তাকে হাসপাতালে নেয়ার অনুরোধ করেন। পথে তারা সালমান শাহর গলায় দড়ির দাগ এবং মুখমণ্ডল ও পায়ে নীলচে দাগ দেখতে পান। পরে তাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সালমান শাহ অনেক আগেই মারা গেছেন।

মোহাম্মদ আলমগীর আরও উল্লেখ করেন, সালমান শাহর বাবা কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী মৃত্যুর আগে ছেলের মৃত্যুকে হত্যা বলে সন্দেহ করে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি দরখাস্ত দাখিল করেন। এতে তিনি রমনা থানার অপমৃত্যু মামলাটি দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ এবং সিআইডির মাধ্যমে তদন্তের আবেদন জানান।

 

সালমান শাহর বাবার মৃত্যুর পর আলমগীর তার বোনের পক্ষ থেকে মামলাটি পরিচালনা করছেন। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ মারা গেলে প্রমাণ সাপেক্ষে তারা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পাবেন। তবে, এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে সালমান শাহকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সালমান শাহ। তার প্রকৃত নাম ছিল শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। ক্যারিয়ারের শুরুতে ছোটপর্দায় কাজ করেছেন সালমান শাহ। ‘আকাশ ছোঁয়া’, ‘দোয়েল’, ‘সব পাখি ঘরে ফেরে’, ‘সৈকতে সারস’, ‘নয়ন’ ও ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি অনেক বিজ্ঞাপনও করেছেন। এ তারকার সবশেষ সিনেমা ছিল ‘বুকের ভেতর আগুন’।

সালমান শাহ হত্যা মামলা: এবার সামিরার মা’র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা