ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩ : সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির ঢাকা মহাসমাবেশে অংশ নিতে এরই মধ্যে দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী নয়পল্টনে জড়ো হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল থেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। এ সময় সেখানে সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। সন্ধ্যার পর আনা হয়েছে দুটি জলকামান। জোরদার করা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
Advertisement
রাজধানীর নয়াপল্টনেই শনিবার মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। সমাবেশের স্থান নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনিশ্চয়তা ও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হতে পারে- এমন বিষয় মাথায় রেখেই প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। সে লক্ষ্যেই নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেছেন বিএনপির কর্মীরা। তবে মহাসমাবেশ ঘিরে নিজেদের থেকে সংঘাতে না জড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সময় সমাবেশের একদিন আগেই বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ পুরো নয়াপল্টন এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, সারাদেশ থেকে আসা বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানেই তারা সারারাত অবস্থান করবেন। সরকারের পদত্যাগের বার্তা নিয়েই তারা ঘরে ফিরবেন।
বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেষ হয়ে এসেছে, তাই সাধারণ জনগণও রাস্তায় নেমে এসেছে। একদিন আগেই দেখছেন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের কী অবস্থা, তার মানে কাল ঢাকা শহর যে নেতাকর্মীরা দখল করে নেবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করতে চাই। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটুক।
বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের বেশিরভাগ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই চলে এসেছে। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের আশ্রয়ে থেকেছেন। পুলিশি তল্লাশির ভয়ে তারা কেউ রাজধানীর কোনো হোটেলে অবস্থান করার ঝুঁকি নেননি।
Advertisement
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে জড়ো হাজারও নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে, পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এদের বেশিরভাগই ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন নানা কৌশলে। দিনভর নয়াপল্টনে দেখা যায় বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
তারা আরও জানান, পুলিশি গ্রেপ্তার, হয়রানি ও তল্লাশি এড়াতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা অনুসরণ করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ঢাকায় মহাসমাবেশের উদ্দেশ্যে যাওয়া নেতাকর্মীদের দলবদ্ধভাবে না যাওয়া, হোটেল-মেসে না থাকা, স্মার্ট ফোন না ব্যবহার করাসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীরা চেষ্টা করছেন সেইসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে।
এদিকে সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই রিকশা মিছিল করেন চালকসহ নয়াপল্টনে থাকা কয়েকশ নেতাকর্মী। পায়ে হাঁটার পাশাপাশি রিকশা ভাড়া করে মিছিল করছেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেককে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উড়াতে দেখা যায়।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশের গলিতে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শুক্রবার বিকেলে নাইটিঙ্গেল মোড়ে ডিবি প্রধান হারুন উর রশীদ বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই দলই সমাবেশে অনুমতি পাবে। তবে স্থানের বিষয়ে দ্রুতই জানানো হবে।
Advertisement
রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকায় শুক্রবার পুলিশকে সিসি ক্যামেরা বসাতে দেখা গেছে। পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে নজর রাখা হবে। নয়াপল্টন এলাকার জন্য মোট ৬০টি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যামেরা নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।